- বিশেষ প্রতিনিধি
একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অর্থবহ হতে দিতে চায়নি তারাই বারবার তার ওপর হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২১ আগস্ট ২০২১) রাতে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত সাক্ষাতকারে তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে, পাকিস্তানি বাহিনীকে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গেছে, মেয়েদের ওপর পাশবিক নির্যাতন করেছে। পঁচাত্তর পরবর্তীতে এ শক্তিটাই জিয়াউর রহমানের আমলে মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। বাংলাদেশকে মূল আদর্শ থেকে দূরে ঠেলে দেওয়া হলো।
তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর সেই আদর্শটাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। দেশকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করে, দেশ যেন মর্যাদায় আসীন হয়, সেই চেষ্টা করছি। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির প্রচেষ্টা ছিল, বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, এ বাংলাদেশ যেন আর মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। স্বাধীনতা যেন অর্থবহ না হয়, সেজন্যই তাদের এ প্রচেষ্টা (বার বার হামলার) ছিল। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে তাদের স্লোগান চলত- ‘আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান’। আমরা আছি বলে পারে নাই। বাংলাদেশ বাংলাদেশই হবে।
বারবার হামলা থেকে বেঁচে যাওয়াকে দৈবিক মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে নামার পর থেকে হামলা হচ্ছে। আল্লাহ আমাকে কীভাবে যেন বাঁচিয়ে দিচ্ছেন। হয়তো আমাকে দিয়ে কিছু করাবেন। আল্লাহ তো সবার জন্য কিছু কাজ লিখে রেখেছেন। হয়তো আমার ওপর এই দায়িত্বটা আছে, এই বাংলাদেশকে যে মর্যাদাটা হারিয়ে গেছে, সে মর্যাদায় ফিরিয়ে দেওয়া। গরিব-দুঃখী মানুষের জন্য আমার আব্বা যেটা করতে চেয়েছে, সেটা যেন হয়, এটাই বোধ হয় আল্লাহর ইচ্ছা। আর সেটা যেন আমার হাত দিয়েই হয়। আল্লাহ সেটা চাচ্ছিলেন বলেই বারবার আমাকে হামলার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিচ্ছেন। স্বাধীনতাবিরোধীদের এত আস্ফালনের মধ্যে আমার তো এ দেশে বেঁচে থাকার কথা না।
সাংবাদিক জানতে চান, প্রধানমন্ত্রীর এ সাহসী পথচলার শক্তি কী। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পথচলার শিক্ষা তিনি পেয়েছেন তার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মা শেখ ফজিলাতুন নেছার কাছ থেকে। আর আল্লাহর ওপর ভরসা করে জনগণের সমর্থন ও ভালোবাসা নিয়ে তার এ পথচলা।
২০০৪ সালে ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিএনপি সরকারের আমলে, সারা বাংলাদেশে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য সৃষ্টি হয়েছিল। রাজত্ব কায়েম হয়েছিল। তখন বাংলা ভাই সৃষ্টি, বোমা হামলা, জঙ্গিবাদ, এগুলো প্রতিনিয়ত চলছিল।
খালেদা জিয়ার এক একটা বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে কিন্তু একটা মেসেজ যায়। সে যখন বক্তব্য দিলো আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না, আরেকবার আরেকটা বক্তৃতায় বললো, ২১ আগস্টের আগে দিয়ে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা, বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবে না। এই যে তার বক্তব্য, তার মধ্যে দিয়েই তো বোঝা যায়, কী উদ্দেশ্য ছিল তাদের। আর এর সঙ্গে যে সরকারের সবাই জড়িত ছিল তা স্পষ্ট। তার ক্যাবিনেটের মন্ত্রী, সালাম পিন্টু এর সঙ্গে জড়িত ছিল।