- নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের তৃতীয় দিনের আলোচনা পর্বে বক্তারা উন্নত মানের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণা কর্মকাণ্ড করার আহবান জানিয়েছেন।
শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর ২০২১) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধু চেয়ার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অনারারি অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, পল্লি কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহেমদ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ অংশগ্রহণ করেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, আমাদের অনেক দুঃখ হয় যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা অক্সফোর্ড অব দ্যা ইস্ট হিসেবে বিবেচনা করতাম সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ বিশ্ব র্যাংকিংয়ের অনেক নিচে নেমে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বাড়াতে যে একাডেমিক লিডারশীপ রয়েছে সেটি প্রশাসনকে করার অনুরোধ জানাই এবং এক্ষেত্রে গবেষণার যে প্রচন্ড মূল্য রয়েছে সেই গবেষণার কাজটি আপনারা করবেন৷
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের খ্যাতিমান মানুষদের গর্বের স্থান। আগামী দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতি গঠনের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তাল মিলিয়ে গবেষণা কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে অন্যান্য সকল আধুনিকতায় নিজেকে সমৃদ্ধ করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে৷
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যদি সৃষ্টি না হতো তাহলে বোধহয় পাকিস্তান সৃষ্টি হতো। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই তৎকালীন সময়ে পাকিস্তান সৃষ্টি তে ভূমিকা রেখেছিলো। এ বিশ্ববিদ্যালয় যদি না হতো তাহলে এই রাষ্ট্রভাষা বাংলার যে স্বীকৃত তা আমরা পেতাম না৷ এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্বে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সফল হয়েছিলো।
তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনের এককভাবে নেতৃত্ব দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। মার্শাল ল বিরোধী আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে যে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়েছিলো তার এককভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির যে আলোকবর্তিকা প্রজ্বলিত হয়েছিলো সে কৃতিত্বের সিংহভাগের অংশীদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।
সভাপতির বক্তব্যে ড. আতিউর রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিক্ষকরা এখনো দেশ গড়বার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা, শিক্ষকতা এবং শিক্ষার্থীদের সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি উন্নত মানের বিশ্ববিদ্যালয় করার অঙ্গিকারের সময় এই শতবর্ষ।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও শিক্ষকদের নিয়ে ছাত্র-শিক্ষক বিতর্ক এবং দেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।