চাকরি স্থায়ীকরণ এবং পদোন্নতিসহ বিভিন্ন দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসকদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শনিবার (১৬ মার্চ) এই নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি মিছিলসহ দুই দফা হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে।
এর আগেও বৃহস্পতিবার একই ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন চিকিৎসক আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে। আর এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক রিরাজ করছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের নিয়োগ, পদোন্নতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, বর্তমান উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৮ মার্চ। ইতোমধ্যে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ীকরণ কমিটির মতামত না নিয়ে তড়িঘড়ি করে স্থায়ীকরণের জন্য ভাইভা নিচ্ছেন বর্তমান উপাচার্য, যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
তাদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তি এক বছর পর নিয়মিত হবেন এবং বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ভাইভা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও স্থায়ীকরণ কমিটির মতামতের ভিত্তিতে স্থায়ী হতে পারবেন। স্থায়ীকরণ কমিটিতে থাকতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি, ট্রেজারার, বিভিন্ন বিভাগের ডিন ও হাসপাতাল পরিচালককে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম না মেনে গত তিন বছরে চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন পদে প্রায় দুই হাজার জনকে এডহক ভিত্তিতে (চুক্তিভিত্তিক) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বিএসএমএমইউয়ের একাধিক সূত্র জানায়, চাকরি স্থায়ীকরণ এবং পদোন্নতি বন্ধের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও বিশ্ববিদ্যালয় স্বাচিপ নেতাদের একাংশ মিছিল করে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করে। এ সময় উপাচার্যের অনুগত চিকিৎসকদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পরে গতকাল শনিবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা পাল্টাপাল্টি মিছিল করেছেন। সকালে কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপাচার্যের কাছে গিয়ে বলেন, সব ধরনের নিয়োগ ও পদোন্নতি বন্ধ রাখতে হবে। নিয়োগ-পদোন্নতি নতুন উপাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পর ঠিক করবেন। আর এই নিয়েই চিকিৎসকদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা এবং পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি মিছিলসহ হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল পিস বাংলাকে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাচিপের চিকিৎসক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা মিছিল বের করেন। উনাদের দাবি, যেহেতু ইতিমধ্যে নতুন উপাচার্য নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন সুতরাং কোনো পদোন্নতি দেওয়া, স্থায়ীকরণ, সিন্ডিকেট মিটিং করতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে বর্তমান উপাচার্য নিজেও আশ্বস্ত করেছেন।
বতমান উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ পিস বাংলাকে বলেন, আজ আমাদের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা ছিল। সেখানে কিছু পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশের কথা ছিল। এর মধ্যে কিছু চিকিৎসক এসে আমাকে জানায় এই মিটিং করার প্রয়োজন নেই। এর মধ্যেই বাইরে কিছু মানুষ হইহুল্লোড় করছিল। যেহেতু এটা নিয়ে একটা পক্ষ আন্দোলন করছে, এমন অবস্থায় একাডেমিক কাউন্সিলের সভা বাতিল করা হয় এবং সব ধরনের নিয়োগ, পদোন্নতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ আমিও আমার শেষ সময়ে কোনো ধরনের ঝামেলায় জড়াতে চাই না।