চতুর্থ দফায় আরও ১১৮ শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে চার দফায় মোট ৫৬০ জন একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম এল সরকারের তালিকায়।
রোববার (২৪ মার্চ) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তালিকা প্রকাশ করেন।
আগামী ১৪ ডিসেম্বরের আগেই চূড়ান্ত তালিকা করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আরো কিছু রিভিউ আছে। আমরা প্রাথমিকভাবে ৫৬০ জনের তালিকার খসড়া দিলাম। সর্বশেষ ইনশাল্লাহ ১৪ ডিসেম্বরের আগে চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করব। আজকের তালিকাকে খসড়া তালিকা বলা যেতে পারে।
প্রথম দফায় ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ১৯১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম গেজেট আকারে প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২০২২ সালের ২৯ মে দ্বিতীয় তালিকায় আসে ১৪৩ জনের নাম। আর তৃতীয় দফায় এ বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি ১০৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নামের গেজেট প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
চতুর্থ দফার তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, আজকেই আমরা এই তালিকা গেজেট প্রকাশের জন্য পাঠিয়ে দেব। গেজেট প্রকাশের পর এই তালিকা আপনারা ওয়েবসাইটে পাবেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় যাদের নাম এসেছে, তাদের মধ্যে সাহিত্যিক রয়েছেন ১৮ জন, শিক্ষক ১৯৮ জন, সাংবাদিক ১৮ জন, দার্শনিক একজন, বিজ্ঞানী তিনজন, চিত্রশিল্পী একজন, গবেষক একজন, আইনজীবী ৫১ জন, চিকিৎসক ১১৩ জন, প্রকৌশলী ৪০ জন, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারি ৩৭ জন, রাজনীতিক ২০ জন, সমাজসেবী ২৯ জন, সংস্কৃতিসেবী, চলচ্চিত্র, নাটক, সঙ্গীত, শিল্পকলার অন্যান্য শাখার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩০ জন রয়েছেন। স্থপতি ও ভাস্কর কাউকে পাওয়া যায়নি বলে জানান মন্ত্রী।
শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংজ্ঞায় না পড়লেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত নাম মধুর ক্যান্টিনের ‘মধু দা’কে বুদ্ধিজীবীর তালিকায় রেখেছে সরকার। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতার কারণে বিশেষ বিবেচনায় তাকে শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় রাখা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বিশেষ বিবেচনায় যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধু দা। উনি এমন এক ব্যক্তি ছিলেন শিক্ষকও না, গবেষকও না, শিল্পীও না। উনি এমন এক ব্যক্তি সবাই তাকে চেনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনসহ যত আন্দোলন হয়েছে দেশের স্বাধীনতার জন্য, সেই রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলন যেখানে উনার অন্যন্য ভূমিকা ছিল। সেই হিসেবে বিশেষ বিবেচনায় তালিকায় অন্তভুর্ক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মুধ দা সিম্পলি একজন চায়ের দোকানদার। বলতে পারেন উনি কীভাবে বুদ্ধিজীবী হয়? বাট উনার যে কনট্রিবিউশন, সেই ২৩ বছরে যত নেতা যত কর্মী দেশের জন্য আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের সহযোগিতা করেছেন, উদ্ধুদ্ধ করেছেন, বিনা পয়সায় চা খাইয়েছেন। এই কারণে একটা ব্যতিক্রম। আমরা মধু দা ছাড়া কোনো ব্যক্তিক্রম করি নাই।