ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হচ্ছে আজ। আর আগামীকাল প্রতীক বরাদ্দ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে শুরু হবে প্রচার কার্যক্রম। তবে প্রচারে মানতে হবে আচরণবিধি। না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এবার সারা দেশে চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এরই মধ্যে প্রথম তিন ধাপের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ধাপের তফসিল অনুযায়ী রোববার শেষ হয়েছে আপিল নিষ্পত্তি। তবে এখন পর্যন্ত কতজন প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছেন এ বিষয় জানা নেই বলে জানিয়েছে ইসি।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সময়ের আলোকে বলেন, প্রথম ধাপে এখন পর্যন্ত কতজন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছেন সে তথ্য এখনও আমাদের কাছে আসেনি। পরে হয়তো বলতে পারব। কারণ এগুলো সব বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে, সেখান থেকে পাঠানোর পর একত্রিত করে সঠিক তথ্য জানাতে পারব।
তিনি আরও বলেন, কাল প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা প্রচার কার্যক্রম শুরু করতে পারবেন। এতদিন যেটি করা হয়েছে সেটি জনসংযোগ। প্রচার ও জনসংযোগ এবার (আরপিও সংশোধনীতে) ভিন্ন সংজ্ঞা করা হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের আগে জনসংযোগ করতে পারবে আর প্রচার কার্যক্রম চালাতে পারবে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচনের আচরণবিধি পালনের জন্য প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়নে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। আচরণবিধি লঙ্ঘিত হোক-এটা কোনোভাবেই নির্বাচন কমিশন চায় না। কেউ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অশোক কুমার দেবনাথ জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ১ হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে বাতিল হয়েছে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র। আর বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৮৬ জন। ২৩ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দের পর ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে।
উল্লেখ্য, দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ৪৮১টি। মোট চার ধাপে নেওয়া হবে এসব উপজেলার ভোটগ্রহণ। দ্বিতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন রোববার। মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ হবে ২ মে। আর ১৬১ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে। এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি যেখানে, সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত থাকবেন।
তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ মে। আপিল নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯ মে। এই ধাপে ৪৭ জেলার ১১২ উপজেলায় ভোট হবে।
এই ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত জেলা ও অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিষ্পত্তি করবেন জেলা প্রশাসক। আর চতুর্থ ধাপের তফসিল ঘোষণা না করলেও আগামী ৫ জুন ভোটের দিন নির্ধারণ করেছে ইসি।