মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

অফিস-বাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা: মেয়র আতিক

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী ২৭ এপ্রিল থেকে যে-সব বাড়ি ও অফিসে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাবে, তাদেরকে জেল-জরিমানা করা হবে। এমনকি সরকারি অফিসে বা সিটি করপোরেশনের কোনো অফিসে যদি এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়, সেই অফিসের কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও মামলা ও জেল-জরিমানা করা হবে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর রূপনগর আবাসিক এলাকা, মিরপুর সেকশন ৭, ২৩ নম্বর রোডে ডেঙ্গু প্রতিরোধে একযোগে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে মাসব্যাপী জনসচেতনতামূলক প্রচার অভিযানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় মেয়র আতিক বলেন, আগামী ২৭ এপ্রিল থেকে যে-সব বাড়িতে ও অফিসে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাবে, তাদের জরিমানা করা হবে। ২২ এপ্রিল থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত এই ৫ দিন জেল-জরিমানা হবে না।
তিনি বলেন, মানুষ অবহেলা করে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে যায়। ওই আবর্জনায় ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এইডিস মশা জন্মাতে পারে। কারও মৃত্যুর কারণ হতে পারে। আমরা চিপসের প্যাকেট, চায়ের কাপ, দইয়ের বাটিসহ নানাকিছু আমরা ফেলে রাখি। একবার চিন্তা করি না এটাতে মরণব্যাধি ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এইডিস মশার জন্ম হয়। ওই কিন্তু কে মেয়র, কে সংসদ সদস্য, কে নেতা তা চিনবে না। মশা চিনবে রক্ত, সবাইকে কামড়াবে।
মেয়র বলেন, যার বাড়িতেই লার্ভা পাওয়া যাবে সঙ্গে সঙ্গেই মামলা ও জরিমানা করা হবে। সরকারি অফিস ভবন থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশনের অফিসও ছাড় পাবে না। জরিমানার টাকার পরিমাণ আগের চেয়ে আরো বাড়বে।
পরে মেয়র স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে পরিত্যক্ত বর্জ্য কিনে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা দিয়ে বর্জ্য কিনে নেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিসে লোকজন বর্জ্য জমা দিয়ে টাকা নিয়ে যাবেন। ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে এসব বর্জ্য কিনে নেওয়া হবে। আগামী এক মাস এ কার্যক্রম চলবে, প্রাথমিকভাবে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ আছে, তারপরও টাকা দিয়ে বর্জ্য কিনে নেওয়া যৌক্তিক কি না এমন প্রশ্নে আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা আগে দেখি। এখন যদি টাকার কথা চিন্তা করি, তাহলে হবে না। একটা চিপসের ফেলে রাখা প্যাকেটের কারণে একটা মানুষের মৃত্যু হতে পারে। চিপসের প্যাকেটের দাম নিচ্ছি এক টাকা, মানুষের জীবন টাকা দিয়ে মূল্যায়ন করা যাবে না। রাস্তায় যে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে সেটা তুলে আনা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের জন্য অসম্ভব। আমরা এক মাস দেখি, একটা অ্যাওয়ারনেস বিল্ডআপ হোক।
ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মাঈনুল হোসেন খান নিখিল অনুষ্ঠানে বলেন, মেয়র অনেক উদ্যোগ নিলেও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সেগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয় না। মেয়র নিজে খালে নেমে খাল পরিষ্কার করেন। কিন্তু তিনি চলে যাওয়ার পর তিনি যে উদ্যোগ নিলেন সেটা আর বাস্তবায়ন হতে আমরা দেখি না। যদি থাকত তাহলে খালে পানির প্রবাহ থাকত।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বে-নজির আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এইডিস জীবাণুবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এম এম আক্তারুজ্জামান, ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাঈন উদ্দিনসহ কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত পোস্ট