সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পটুয়াখালী মেডিকেলে দালালের দৌরাত্ম্য বন্ধে ডিসিকে চিঠি

  • পটুয়াখালী প্রতিনিধি

দালালদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবদুল মতিন। ২৭ আগস্ট তিনি এ আবেদন করেন।

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পমেকহা/পটুয়া/২০২১/১৫৪৩নং স্মারকের ওই চিঠিতে হাসপাতাল পরিচালক উল্লেখ করেন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগ এবং আন্তঃবিভাগে দালাল এবং ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের প্রাদুর্ভাব দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে রোগীরা বিভিন্নভাবে প্রতারিত হচ্ছেন। হাসপাতালে আগত রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। যার ফলে রোগীরা যেমন হাসপাতালে কাক্সিক্ষত মানের সেবা পাচ্ছে না তেমনি সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগে হাসপাতালে দালাল রোধকল্পে বিভিন্ন স্থানে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড টানানোর পরও বিন্দুমাত্র কাজ হয়নি। এতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এমতাবস্থায় হাসপাতাল থেকে দালাল, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি এবং বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের অবাধ বিচরণ রোধকল্পে জরুরি ভিত্তিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার জন্য জেলা প্রশাসককে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে এ চিঠির ব্যাপারে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করছেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা।

ফার্মাসিউটিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাসোসিয়েশন ‘ফারিয়া’ পটুয়াখালী জেলা শাখার সভাপতি মো. রকিবুল হাসান রুবেল জানান, হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিজিটের জন্য সপ্তাহে দুদিন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রতি রোববার ও বুধবার দুপুর ১টার পর তারা ভিজিট করেন। এর বাইরে ওষুধ কোম্পানির কোনো প্রতিনিধি হাসপাতাল ভিজিট করেন না।

রুবেল জানান, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা শুধু যার যার কোম্পানির পক্ষে ওষুধ নেওয়ার জন্য মতামত দেন। কোনো রোগীকে হাসপাতাল থেকে অন্য কোথাও যাওয়ার পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ নাই। পাশাপাশি রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালে না করার পেছনে এখানকার বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজন দায়ী থাকতে পারে। সেটাও করে থাকে দালাল চক্র। এর সঙ্গে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের জড়ানো সম্পূর্ণ অহেতুক।

রুবেল আরও জানান, হাসপাতালে থাকার জন্য কোনো পরিবেশ নাই। নোংরা ময়লা-আবর্জনায় গোটা হাসপাতাল নাকাল। তত্ত্বাবধায়ক সাহেব সেদিকে নজর না দিয়ে বিনা কারণে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের জড়াচ্ছেন।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবদুল মতিন কিছুটা ক্ষিপ্ত ও উত্তেজিত হয়ে বলেন, ওরা (ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা) ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে ভিড় করে, জটলা করে এতে সমস্যা হয়। আমার সমস্যার কথা আমি চিঠিতে লিখে দিয়েছি এখন যা করার ডিসি সাহেব করবেন।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেনের সেল নম্বরে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

সম্পর্কিত পোস্ট