শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

গুরুত্বপূর্ণ নগরী কুন্দুজ তালেবানের দখলে

পিস বাংলা By পিস বাংলা আগ৮,২০২১
  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ের পর আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নগরী কুন্দুজ দখল করে নিয়েছে তালেবান। খবর-বিবিসি বাংলার।

একজন স্থানীয় কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, কেবলমাত্র কুন্দুজের বিমানবন্দর ছাড়া আর সব কিছু এখন তালেবানের দখলে চলে গেছে। শহরে এখন চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে, বিভিন্ন ভবনে এবং দোকানপাটে আগুন জ্বলছে।

এ নিয়ে আফগানিস্তানের চারটি প্রাদেশিক রাজধানী এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে গেল। এর মধ্যে তালেবানের জন্য কুন্দুজই সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ বিজয়।

তালেবান বিদ্রোহীরা তীব্র লড়াই করে আরেকটি উত্তরাঞ্চলীয় শহর সার-ই-পুলও দখল করে নিয়েছে। তবে আফগান কর্মকর্তারা দাবি করছেন, তাদের বাহিনী এখনো ঐ শহরে আছে এবং লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশ তাদের সেনা প্রত্যাহার শুরু করার পর সেখানে আবার তীব্র লড়াই শুরু হয়। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যুদ্ধ চলছিল গত দুই দশক ধরে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তালেবান বিদ্রোহীরা খুবই দ্রুত বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে নিয়েছে। এখন তারা বড় বড় নগরী এবং শহরকে টার্গেট করেছে। আফগানিস্তানের পশ্চিমে হেরাত এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কান্দাহার এবং লস্কর গাহেও তীব্র লড়াই চলছে।

আফগানিস্তানে এবছরের লড়াইয়ে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। উত্তরাঞ্চলীয় শহর আসাদাবাদে ছোট ছোট শিশু সহ অনেকগুলো পরিবার একটি স্কুলে এসে আশ্রয় নিয়েছে।

‍‌‌‍‌ফরাসী বার্তা সংস্থা এএফপিকে পালিয়ে আসা এক উদ্বাস্তু গুল নাজ বলেন, “আমাদের গ্রামে অনেক বোমা পড়েছিল। তালেবান এসে সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা একেবারে অসহায় হয়ে পড়ি এবং আমাদেরকে বাড়িঘর ছেড়ে চলে আসতে হয়। আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এখানে খুবই খারাপ অবস্থায় মাটিতে ঘুমাচ্ছি।”

তালেবান গত মে মাসে আফগানিস্তানে নতুন উদ্যমে লড়াই শুরু করার পর কুন্দুজকে তাদের সবচেয়ে বড় বিজয় বলে মনে করা হচ্ছে।

কুন্দুজ হচ্ছে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে যাওয়ার প্রধান প্রবেশপথ।

এটির অবস্থান কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ রাজধানী কাবুল এবং উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নগরীর সঙ্গে মহাসড়কের মাধ্যমে সরাসরি সংযোগ আছে কুন্দুজের।

তাজিকিস্তানের সঙ্গে অভিন্ন সীমান্তও আছে এই প্রদেশের। এই সীমান্তপথ দিয়েই আফগানিস্তানে উৎপাদিত আফিম এবং হেরোইন মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে পাচার করা হয়, সেখান থেকে যায় ইউরোপে।

কুন্দুজ নিয়ন্ত্রণ করার মানে হচ্ছে এই অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাদক চোরাচালানের রুট নিয়ন্ত্রণ করা।

তালেবানের কাছে কুন্দুজের এই বিজয়ের একটি প্রতীকী তাৎপর্যও আছে। ২০০১ সালের আগে এটি ছিল উত্তরাঞ্চলে তাদের অন্যতম ঘাঁটি।

তালেবান ২০১৫ সালে এবং আবার ২০১৬ সালেও এই কুন্দুজ দখল করে নিয়েছিল, কিন্তু বেশিদিন ধরে রাখতে পারেনি।

সম্পর্কিত পোস্ট