শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

‘লীগ’ যুক্ত করে শতাধিক ভুঁইফোঁড় ‘রাজনীতির দোকান’

পিস বাংলা By পিস বাংলা জুলা২৬,২০২১
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নাম ব্যবহার করে শতাধিক ভুঁইফোঁড় সংগঠন গড়ে ওঠে। সংগঠনের অগেপরে লীগ লিখে এখন শত শত লীগ। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা এসব ভুঁইফোঁড় সংগঠন এখন আওয়ামী লীগের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও মধ্যম সারির নেতারা অংশ নিয়ে থাকেন এসব সংগঠনের অনুষ্ঠানে।

সর্বশেষ হেলেনা জাহাঙ্গীরের ‘চাকরিজীবী লীগ’ গঠণ করার বিষয়েও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর অনুমতি নিয়েছেন বলে তিনি গণমাধ্যমকে জানালেও বাস্তবে এর সত্যতা মেলেনি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্বীকৃত সংগঠনের বাইরে কোনো মনগড়া বা হঠাৎ গজিয়ে ওঠা সংগঠনকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, দলের গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী আওয়ামী লীগের রয়েছে সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ও বিভিন্ন উপকমিটি। স্বীকৃত সংগঠনের বাইরে যেকোনো নামের সঙ্গে ‘লীগ’ বা ‘আওয়ামী’ শব্দ জুড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে স্বীকৃত আটটি সহযোগী ও তিনটি ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন রয়েছে। সহযোগী সংগঠনগুলো হচ্ছে- ১। যুবলীগ, ২। কৃষক লীগ, ৩। স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ৪। আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, ৫। যুব মহিলা লীগ, ৬। মহিলা আওয়ামী লীগ, ৭। তাঁতী লীগ এবং ৮। আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ। ভ্রাতৃপ্রতিম তিনটি সংগঠন হলো- ১। ছাত্রলীগ, ২। শ্রমিক লীগ এবং ৩। মহিলা শ্রমিক লীগ।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন নেতাদের মৌখিক সম্মতিতে কাজ করছে আওয়ামী মোটর চালক লীগ, হকার্স লীগ ও বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ। আর বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমতি নিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম করে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদ।

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে-পরে এমন কয়েকটি সংগঠনের কার্যকলাপ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার জের ধরে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দলের সহযোগী সংগঠন ছাড়া কেউ নামের সঙ্গে ‘লীগ’ শব্দ যোগ করতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলছেন, জাতির পিতা বা পরিবারের সদস্যদের নামে সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান করার সুনির্দিষ্ট বিধান আছে। এর বাইরে কেউ করলে তা বেআইনি হবে। কেউ অনুমতি ছাড়া কিছু করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা আছে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকেও।

ভুঁইফোঁড় সংগঠনের মধ্যে রয়েছে:

১. মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ, ২. জাতীয় শিশু-কিশোর লীগ, ৩. বাংলাদেশ আওয়ামী তৃণমূল লীগ, ৪. আওয়ামী সোনার বাংলা লীগ, ৫. আওয়ামী বাস্তুহারা কল্যাণ সমিতি, ৬. আওয়ামী সমবায় লীগ, ৭. আওয়ামী শিশু লীগ, ৮. আওয়ামী প্রচার লীগ, ৯. আওয়ামী ছিন্নমূল হকার্স লীগ, ১০. আওয়ামী তরুণ লীগ

১১. আওয়ামী রিকশা মালিক শ্রমিক ঐক্য লীগ, ১২. আওয়ামী পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা লীগ, ১৩. আওয়ামী নৌকার মাঝি লীগ, ১৪. আওয়ামী ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী লীগ, ১৫. আওয়ামী যুব সাংস্কৃতিক জোট, ১৬. আওয়ামী পর্যটন লীগ, ১৭. বঙ্গবন্ধু বাস্তুহারা লীগ, ১৮. বঙ্গবন্ধু আদর্শ পরিষদ, ১৯. বাংলাদেশ আওয়ামী অনলাইন লীগ, ২০. বিশ্ব আওয়ামী অনলাইন লীগ

২১. বঙ্গবন্ধু লেখক লীগ, ২২. জননেত্রী পরিষদ, ২৩. দেশরত্ন পরিষদ, ২৪. নৌকা সমর্থক গোষ্ঠী, ২৫. বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, ২৬. আওয়ামী হকার্স ফেডারেশন, ২৭. বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারা বাস্তবায়ন পরিষদ, ২৮. বঙ্গমাতা পরিষদ, ২৯. ডিজিটাল আওয়ামী প্রজন্ম লীগ, ৩০. মুক্তিযোদ্ধা তরুণ লীগ

৩১. বঙ্গবন্ধু গ্রাম ডাক্তার পরিষদ, ৩২. জননেত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় লীগ, ৩৩. আমরা মুজিব হবো, ৩৪. নৌকার নতুন প্রজন্ম, ৩৫. ডিজিটাল ছাত্রলীগ, ৩৬. একুশ আগস্টের ঘাতক নির্মূল কমিটি, ৩৭. সজীব ওয়াজেদ জয় পরিষদ, ৩৮. বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, ৩৯. বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদ, ৪০. দেশীয় চিকিৎসক লীগ

৪১. আমরা নৌকা প্রজন্ম, ৪২. নৌকার নতুন প্রজন্ম, ৪৩. বঙ্গবন্ধু একাডেমী, ৪৪. বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদ, ৪৫. বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা গবেষণা পরিষদ, ৪৬. বঙ্গবন্ধু শিশু একাডেমী, ৪৭. বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ, ৪৮. বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ, ৪৯. বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদ, ৫০. বঙ্গবন্ধু জাতীয় লেখক পরিষদ

৫১. বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ, ৫২. বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, ৫৩. বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগ, ৫৪. আমরা মুজিব সেনা, ৫৫. রাসেল মেমোরিয়াল একাডেমী, ৫৬. শেখ রাসেল শিশু পরিষদ, ৫৭. শেখ রাসেল শিশু সংসদ, ৫৮. ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া ফাউন্ডেশন, ৫৯. জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী, ৬০. পঁচাত্তরের ঘাতক নির্মূল কমিটি

৬১. মুক্তিযুদ্ধ ও গণমুক্তি আন্দোলন, ৬২. মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবার কল্যাণ পরিষদ, ৬৩. মুক্তিযোদ্ধা জনতা লীগ, ৬৪. আওয়ামী শিশু-যুবক সাংস্কৃতিক জোট, ৬৫. চেতনায় মুজিব, ৬৬. দেশীয় চিকিৎসক লীগ, ৬৭. ছিন্নমূল মৎস্যজীবী লীগ, ৬৮. ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লীগ, ৬৯. বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারা বাস্তবায়ন পরিষদ, ৭০. বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ

৭১. জনসেবা লীগ, ৭২. বাউল লীগ, ৭৩. গাড়ী চালক লীগ, ৭৪. স্বাধীনতা লীগ, ৭৫. তরুণ জনতা লীগ, ৭৬. তরুণ লীগ, ৭৭. বাংলাদেশ ইলেকট্রিক লীগ, ৭৮. নাপিত লীগ, ৭৯. ফকির লীগ, ৮০. প্রবীণ লীগ

৮১. বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশল পরিষদ, ৮২. বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদ, ৮৩. আমরা নৌকার কর্মী, ৮৪. বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পরিষদ, ৮৫. নবীন লীগ, ৮৬. বঙ্গবন্ধু আওয়ামী পরিবার লীগ, ৮৭. বাংলাদেশ আওয়ামী মিডিয়া লীগ, ৮৮. আল্লাহ ওয়ালা লীগ সহ বাহারি নামের সংগঠন।

সম্পর্কিত পোস্ট