সোমবার, ২০ মে ২০২৪

সমালোচনা নয়, আসুন দেশের জন্য একসঙ্গে কাজ করি: নসরুল হামিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক By নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রু১৫,২০২৪

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সমালোচনা নয় আসুন, একসঙ্গে দেশের জন্য কাজ করি। আমি চাই, গঠনমূলক আলোচনা হোক। যিনি কাজ পারবেন না, তাকে বাদ দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) পেট্রোবাংলা আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় সমন্বিতভাবে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে কার্যক্রম আরও বাড়ানো হবে। ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন করা হবে। আরও ১০০টি কূপ খননের কার্যক্রম নেয়া হচ্ছে। গ্যাসের চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে। চাহিদার সাথে সরবরাহের সমন্বয় করে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা হবে।

সেমিনারে গ্যাসের চাহিদা-সরবরাহ ও সিসমিক সার্ভে এবং কূপ খনন জোরদার করার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়। এতে পেট্রোবাংলা ও কোম্পানিসমূহের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, বুয়েট ও ঢাবি শিক্ষকসহ জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।

২০২৮ সালের মধ্যে আরও ১০০ টি কুপ খনন করতে চায় পেট্রোবাংলা। এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২৮ সালের মধ্যে ১০০ কূপ খনন করতে চান ভালো কথা, কোনটি কখন করতে চান, টাইমলাইন থাকতে হবে। সাফল্য দেখে মূল্যায়ন করা হবে। সাফল্য জিরো, আপনিও জিরো।

তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে পরিকল্পনা সাজানো হবে। ২০২৯-৩০ সালের দিকে গ্যাসের চাহিদা হতে পারে ৬৬৫৫ এমএমসিএফডি। অন্যদিকে নিজস্ব খনিতে মজুদ কমে যাচ্ছে। বিকল্প জ্বালানির চিন্তাও আমাদের করতে হচ্ছে। প্রতিটি কাজের টাইম লাইন থাকা বাঞ্ছনীয়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সমালোচনা না করে কীভাবে সরবরাহ বাড়ানো যায়-তার সুষ্পষ্ট প্রস্তাবনা প্রয়োজন। দেশিয় গ্যাস আমদানিকৃত এলএনজির সাথে মিশিয়ে মিশ্রিত গ্যাসের প্রতি কিউবিক মিটার ক্রয় মূল্য ২৪.৮০ টাকা এবং গড়ে বিক্রয় করা হয় প্রতি কিউবিক মিটার ২১.৪১ টাকা। এই ঘাটতি সুষম উন্নয়ন ব্যহত করতে পারে। তা ছাড়াও বিদ্যুৎতে চাহিদা মতো গ্যাস দিতে পারলে ভর্তুকী প্রায় ৭০ ভাগ কমে যাবে।

তিনি বলেন, যারা বাইরে আছেন, তাদের সবাইকে সঙ্গে রাখতে হবে। ১৯৮০ সালে ২ডি করা হয়েছে। ৩৯ বছর পরে ৩ডি, তাহলে এতদিন কেন বসে থাকলেন? জ্বালানিতে যারা ছিলেন, তারা টেকনিক্যাল পার্সন। তারা বলতেন, সম্ভাবনা নেই। আর সমালোচনা নয়। আসুন, একসঙ্গে দেশের জন্য কাজ করি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যিনি কাজ পারবেন না, তাকে বাদ দেওয়া হবে। বক্স থেকে বের হয়ে আসতে হবে। কেউ কাউকে জায়গা ছাড়তে চায় না। বাপেক্স ১০০ বছর ধরে কাজ করবে। তার জন্য ফেলে রাখতে হবে। বাপেক্সের একটি প্রতিযোগী থাকা উচিত।’

তিনি সবার উদ্দেশে বলেন, ‘আমি চাই, গঠনমূলক আলোচনা হোক। আমাদের গ্যাস লাগবে। সমালোচনা রয়েছে, বিতরণ কোম্পানি টাকা নেয়, গ্যাস দেয় না। বিতরণ কোম্পানিগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। চুক্তি থাকবে, গ্যাস না-দিলে টাকা দিতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ কি শুধু টেকনোলজি! টেকনোলজির সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন, কোয়ালিটি জ্বালানিও স্মার্ট বাংলাদেশের অংশ।

তিনি বলেন, রিজার্ভ কমে আসায় দেশীয় গ্যাস ফিল্ডের উৎপাদন কমতে শুরু করেছে। ২/৩ বছর কমবে আবার বাড়বে। কীভাবে ঘাটতি সামাল দেবো, তার পরিকল্পনা থাকতে হবে। ৪৮ কূপ খনন প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী দুই বছরে ৫০০ এমএমসিএফডি গ্যাস পাবো। কিন্তু ২ বছরে চাহিদা কত হবে, ২০০০ হাজার এমএমসিএফডি বাড়বে।

সেমিনারে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার-এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নূরুল আলম বক্তব্য রাখেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম ও পেট্রোবাংলার জেনারেল ম্যানেজার (রিজার্ভ এবং ডাটা ম্যানেজমেন্ট) মেহেরুল হাসান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম, অধ্যাপক ড. এ এসএম ওবায়দুল্লাহ, অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ভূইয়া, সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. হুসেন মো. সায়েম, অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন, বুয়েটের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান ও অধ্যাপক ড. মো. ইজাজ হোসেন।

এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন, পেট্রোবাংলার বিভিন্ন দফতর সমূহের বর্তমান ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকবৃন্দ।

সম্পর্কিত পোস্ট