সোমবার, ২০ মে ২০২৪

ডব্লিউএইচওর আশঙ্কা ২০৫০ সালে ক্যানসার বাড়বে ৭৫ শতাংশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক By আন্তর্জাতিক ডেস্ক ফেব্রু২,২০২৪
২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে বার্ষিক ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে ৭৫ শতাংশের বেশি।
দ্য গার্ডিয়ানের খবর অনুযায়ী, ডব্লিউএইচওর ক্যানসার বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের (আইএআরসি) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০৫০ সালে গিয়ে বার্ষিক নতুন আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৩ কোটি ৫০ লাখ। ক্যানসারে আক্রান্ত ও মৃত্যু বৃদ্ধির নেপথ্যে অসমতার ভূমিকার কথাও বলেছেন তারা।
আইএআরসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালে নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ কোটি ৪১ লাখ মানুষ, মৃত্যু হয়েছিল ৮২ লাখ মানুষের। এক দশক পর ২০২২ সালে এসে ক্যানসারে আক্রান্ত হন ২ কোটি মানুষ। মৃত্যু হয় ৯৭ রাখ মানুষের।
আইএআরসি অনুমান করছে, ২০৫০ সালে ৩ কোটি ৫০ লাখ মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হতে পারে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৭৭ শতাংশ বেশি। ২০৫০ সালে ক্যানসারে মৃত্যু হবে ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের, ২০১২ সালের তুলনায় যা দ্বিগুণেরও বেশি।
আইএআরসি বলছে, তামাকের ব্যবহার, অ্যালকোহল কেনাবেচা আর স্থূলতা ক্যানসার বৃদ্ধির প্রধানতম কারণ। তাদের অনুমান, ২০৫০ সালে যে ৩ কোটি ৫০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হবে, তাদের মধ্যে উন্নত দেশের আক্রান্ত হবে কেবল ৪৮ লাখ মানুষ। তবে স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে আক্রান্তের সংখ্যা মারাত্মকভাবে বাড়বে বলে তাদের অনুমান।
ওই দেশগুলোতে ক্যানসারে মৃত্যু দ্বিগুণ হবে বলে ধারণা করছে আইএআরসি। আইএআরসির ক্যানসার সারভেইলেন্স ব্রাঞ্চের শীর্ষ ব্যক্তি ড. ফ্রেডি ব্রে মনে করছেন, দেশে দেশে মৃত্যু বৃদ্ধির ব্যাপারটা ঘটবে এমন না। তারাই বেশি ভুক্তভোগী হবে, যাদের এই রোগ মোকাবিলার সামর্থ্য নেই।
বিশ্বের ১৮৫টি দেশের ৩৬ ধরনের ক্যানসার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আইএআরসির গ্লোবাল ক্যানসার অবজারভেটরি। তারা বলছে, ২০২২ সালে বিশ্বে যত মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছে এবং যতজনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী ১০ রকমের ক্যানসার।
২০২২ সালে নতুন আক্রান্তের ১২.৪ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে ফুসফুসের ক্যানসারে। এই বছরের ১৮ শতাংশ মৃত্যু ঘটেছে ওই ক্যানসারে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১.৬ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে স্তন ক্যানসারে। এই ক্যানসারে মৃত্যু হয়েছে ৭ শতাংশের। এ ছাড়া লিভার ও পাকস্থলীর ক্যানসারেও বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ক্যানসার বৃদ্ধিতে অসমতার ভূমিকার কথা তুলে এনেছে আইএআরসি। দেখিয়েছে স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে ধনী দেশের তুলনায় দরিদ্র দেশে চিকিৎসা নেওয়ার হার ৫০ শতাংশ কম। সে কারণে মৃত্যু বেশি। সাব সাহারান আফ্রিকার দেশগুলোতে নিরাময়যোগ্য ক্যানসারেও বহু মানুষের মৃত্যুর কথা তুলে এনেছেন তারা।
ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কন্ট্রোলের প্রধান ড. ক্যারি অ্যাডামস দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, মানুষের জীবনকে মানুষের জীবন হিসেবেই বিবেচনা করা উচিত। তার মতে, ক্যানসার সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার হিসেবে নেওয়া উচিত সরকারগুলোর। প্রত্যেকের জন্য মানসম্মত ও সাশ্রয়ী ক্যানসার সুরক্ষা নিশ্চিতের ব্যবস্থা করতে হবে। এটা রাজনৈতিক ইচ্ছার প্রশ্ন।

সম্পর্কিত পোস্ট