শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

লঞ্চ যোগে চাঁদপুরে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড়

কর্মসংস্থানের কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে থাকেন চাঁদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক জেলার মানুষ। এসব মানুষ পরিবারের সাথে ঈদুল ফিতর উদযাপন করার জন্য সদরঘাট থেকে লঞ্চ যোগে চাঁদপুরে ফিরতে শুরু করেছেন। আধাঘণ্টা এক ঘণ্টা পর পর যাত্রী নিয়ে ঘাটে ভিড়ছে লঞ্চ। তবে এ বছর ব্যবসায়ী ছাড়া অন্যান্য পেশার লোকজন আগেই ছুটি পেয়েছেন।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চাঁদপুর লঞ্চঘাটে অপেক্ষা করে দেখা গেছে ঢাকা থেকে চাঁদপুরগামী লঞ্চের সংখ্যাই বেশি। আবার সিডিউলের লঞ্চগুলোও চাঁদপুর থেকে সদরঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে।
সকাল সাড়ে ১০টায় সদরঘাট থেকে ছেড়ে চাঁদপুর ঘাটে আসে এমভি সোনারতরী-১। এই লঞ্চটি যাত্রী ছিলে কমপক্ষে সহস্রাধিক। এর আধঘণ্টা পর ১১টায় লঞ্চঘাটে ভিড়ে এমভি অগ্রদূত। এই লঞ্চটিতে প্রচুর যাত্রী ছিল। লঞ্চটি ঢাকা সদরঘাট থেকে ছেড়ে চাঁদপুর হয়ে শরীয়তপুর ঈদগা ফেরিঘাটে গিয়ে যাত্রী নামায়।
বেলায় ১১টায় ঢাকা থেকে আসে বিলাসবহুল লঞ্চ এমভি বোগদাদিয়া-৭। এই লঞ্চটিও অনেক যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর ঘাটে ভিড়ে।
ফরিদগঞ্জ রূপসা এলাকায় বাড়ি অগ্রদূত লঞ্চের যাত্রী হিমেল জানান, পরিবারের সাথে ঈদ করার জন্য বাড়িতে এসেছি। যদিও লঞ্চে যাত্রী বেশি থাকাতে কষ্ট হয়েছে, তা কিন্তু ঈদ আনন্দের কাছে কিছুই না। কারণ লঞ্চের চাইতে সড়ক পথে ভ্রমণ আরো বেশি কষ্ট।
ঢাকায় বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন রিয়াজ। তিনি লক্ষ্মীপুর জেলার বাসিন্দা। সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে লঞ্চ যোগে চাঁদপুর ঘাটে এসে নেমেছেন। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে আরও দুইদিন অফিস খোলা ছিল। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে আগেই চলে আসলাম। মা-বাবার সাথে ঈদ উদযাপন করবো। সন্তানগুলোও দাদা-দাদীর সান্নিধ্য পেল।
স্বামীর চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকেন খাদিজা বেগম। তিন সন্তানকে নিয়ে চাঁদপুরে এসেছেন লঞ্চে করে। তিনি বলেন, আমার শ্বশুর-শাশুড়ি নেই। তবে শ্বশুর পরিবারের অন্যান্য লোকদের সাথে ঈদ করার জন্য বাড়িতে এসেছি। ঈদ আসলেই সন্তানরা বাড়িতে আসার অপেক্ষায় থাকে। বাড়িতে এসে ঈদ উদযাপন করলে আমাদের চাইতে শিশুর বেশি আনন্দ পায়।
কামরুল হাসান থাকেন ঢাকায়। বাড়ি চাঁদপুর সদের। বাবার সাথে পুরো পরিবার সদস্যরা লঞ্চ যোগে চাঁদপুরে এসেছেন। কামরুল জানালেন, বাবা-মাকে সাথে নিয়ে লঞ্চে চাঁদপুরে আসার উদ্দেশ্যে হচ্ছে দাদা-দাদীর সাথে ঈদ করা। কারণ বাড়িতে না আসলে ঈদের আনন্দ উপলব্ধি হয় না। ঈদে অনেক মজা করবো।
ঘাটের লঞ্চ মালিক প্রতিনিধি আলী আজগর সরকার বলেন, যাত্রীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য আমাদেরও সার্বিক চেষ্টা অব্যাহত। যে কারণে আমরা লঞ্চগুলো ঘাটে ভিড়লে যাত্রীদের সু-শৃঙ্খল ভাবে নামতে সহযোগিতা করি।
চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে কয়েক স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদী পথে নিরাপত্তার জন্য নৌ-পুলিশ সদস্যরা টহলে রয়েছে। ঘাটে নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। ঘাটে আমাদের ৮টি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। যাত্রীরা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে সে জন্য আমাদের সব ধরণের প্রস্তুতি আছে এবং নৌ-পুলিশ কাজ করছে।

সম্পর্কিত পোস্ট